ঢাকা , শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫ , ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যৌবন হারিয়েছে নদনদী

ড্রেজিং-এর অভাবে অস্তিত্ব সংকট

আপলোড সময় : ১০-০১-২০২৫ ০১:২৩:২২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১০-০১-২০২৫ ০১:২৩:২২ অপরাহ্ন
ড্রেজিং-এর অভাবে অস্তিত্ব সংকট সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
দীর্ঘদিন ড্রেজিং না করায় অস্তিত্ব সংকটে মাদারীপুরের নদনদীগুলো। হারিয়েছে নাব্যতা। কয়েকটি নদীর গতিপথও পরিবর্তন হয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্য, একসময়ের খরস্রোতা নদীগুলো আজ মৃত প্রায়। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় এগুলো বাঁচিয়ে রাখা একান্ত প্রয়োজন। সমীক্ষা করে নদনদীর ড্রেজিং-এর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

একদিকে ফসলি জমি, অন্যদিকে জেগে বসেছে চর। দেখে বোঝার উপায় নেই, এটি কোন নদী নাকি মরা খাল। দীর্ঘদিনেও ড্রেজিং না হওয়ায় মাদারীপুরের শিবচরের বিলপদ্মা নদীর এমনই মরণ দশা। একসময়ে এই নদী দিয়ে চলাচল করছে বড় বড় জাহাজ। ব্যবসা-বাণিজ্যে ঘটতো প্রসার। রাজধানী ঢাকায় লঞ্চে যাতায়াত করতেন স্থানীয়রা। অথচ, কালের বির্বতনে নদীটি এখন অস্তিত্ব সংকটে।

এদিকে মরণ দশা নিয়ে কোন মতে টিকে আছে সদর উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদ, কুমার নদও। দীর্ঘদিন ড্রেজিং-এর অভাবে কোথাও তৈরি হয়েছে বালুচর। হারিয়েছে নাব্য, হারিয়েছে জৌলুসও। নেই খরস্রোতা সেই চিরচেনা রূপ। প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নদনদীগুলোকে ড্রেজিং-এর মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখার আহ্বান এলাকাবাসীর। তা না হলে আগামীতে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় হতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।

পাউবো সূত্র বলছে, জেলার ৫টি উপজেলায় কাগজেকলমে ১৭টি নদনদী থাকলেও ২৫০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পদ্মা, পালরদী, ময়নাকাটা, বিষারকান্দিসহ দৃশ্যমান নদনদীর সংখ্যা ১০টি। শিবচরের বাঁশকান্দি ইউনিয়নের শুম্ভুক গ্রামের বাসিন্দা নাজমা বেগম বলেন, ‘আমাদের বাড়ির কাছে বিলপদ্মা নদী। কালের বিবর্তনে এখন অনেকটাই শুকিয়ে গেছে। এই নদী দিয়ে বড় বড় লঞ্চ চলছে, ট্রলার চলছে। এখন চর পড়ে শুকিয়ে গেছে।’ইটখোলা বাজিতপুর গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ সামচুউদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘ছোট বয়সে নদীর যে স্রোতে দেখেছি এখন তার কিছুই নেই। নদীর স্রোতের শো শো শব্দে ঘুম ভেঙে যেতো। এখন নদী না মরা খাল বোঝার উপায় নেই।

জিয়াউল কবির নামে এক কৃষক বলেন, ‘আমাদের বাড়ির কাছে অনেক বড় একটি সেতু আছে। নদীর ওপরেই সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। সেতুর ৫ ভাগের একভাগও এখন নদী নেই। নিয়মিত ড্রেজিং করা হলে নদীর এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার বেপারী বলেন, ‘পদ্মা নদীতে যে স্রোতে দেখেছি তার এখন কোন অস্তিত্বই নেই। আমরা বন্ধুরা মিলে এই নদীতে ইলিশ ধরেছি। নদীতে এখন পানিও নাই, মাছও নাই। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সরকারের উচিৎ নদীগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সানাউল কাদের খান বলেন, ‘নদীর পানি প্রবাহ সচল ও ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে সমীক্ষা করে নদনদীগুলোতে নেয়া হবে ড্রেজিংএর উদ্যোগ। তবে, আপাতত ড্রেজিং করার এমন কোন প্রকল্প হাতে নেই।’

বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআই্এন


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ